Posts

ভালোবাসার গল্প।পর্ব ২

                            গল্প: ভালোবাসা   পর্ব:২ বাড়িতে জমকালো আয়োজন। বাবার মুখের উপর কথা বলার আর সাধ্য হয়নি আমার। বাবার মায়া মাখানো মুখখানার উপর বলার প্রয়াস ছিলো না যে আমি বিয়ে করতে পারবো না। আজই আমার বিয়ে। আমি বিয়ে করছি একথা শ্রুতি জানে না। জানলে হয়তো ব্যাপারটা অন্যদিকে মোড় দিতো। আমি বাবাকে শ্রুতির কথা বলতে পারি নি, এটা আমার দুর্বলতা। বাবার গ্রাম্য বন্ধুর মেয়েকে না দেখেই বিয়েতে মত দিয়েছি। অবশ্য বাবা আমাকে বারবার কনে দেখার জন্য বলেছিলেন। কিন্তু আমি নিজের থেকেই দেখিনি। শুধু এতটুকু শুনেছি মেয়েটা শ্যামবর্ণের। অনেকদিন পর বাড়ি ভর্তি মেহমান। বাবাকে খুব ব্যস্ত মনে হচ্ছে। এদিক-সেদিক বারবার ঘোরাঘুরি করছেন। আমি বন্ধুদের সাথে বসে আছি। আজ অনেকদিন বাদে বাবার মুখে হাসি দেখছি, স্বর্গীয় হাসির রেখা। এই হাসির জন্য শ্রুতির মতন মেয়েকে হয়তো বিসর্জন দিয়ে গ্রাম্য একটা মেয়েকে বিয়ে করছি। তবে প্রথম প্রেমকে আমি হয়তো ভুলতে পারবো না। বাড়িটা রাজপ্রসাদের মতন সাজানো হয়েছে। চারদিকে লাইটিং এ ভরপুর। ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে...

বোনের ভালোবাসা

                  বোনের ভালোবাসা কিছু বাস্তব কাহিনী.............. - পৃথিবীতে যে পরিবারে ছোট কিংবা বড় কোন বোন নেই,সেই পরিবারের সুখ,আনন্দ,উৎসবটাই যেন কম থাকে। . অনেকেরি হয়ত কোন বোন নেই,অনেকে হয়ত বোনের জন্য চটপট করে,কিন্তু বাস্তবতা যে বড়ই কঠিন।আল্লাহ হয়ত চায়নি যে সবায় বোনের ভালবাসা পাউক,বোনকে নিয়ে একটু আনন্দ উল্লাস করুক। . পৃথিবীতে যদি কোন মধুর সম্পর্ক থাকে,কোন পবিত্র ভালবাসা থাকে তাহলে সেটা হল:-ভাই বোনের ভালবাসা। ভাই বোনের ভালবাসার মত এত খুনসুটি ভালবাসা পৃথিবীর আর কোথাও নেই। . আমি নীল,এই গল্পের লেখক:-আমার লেখা সব গল্পই বাস্তব,আমার জীবন নিয়ে লেখা। . বোনহীন ভাইদের মতো আমার কোন বোন নেই,মাঝে মাঝে অনেক কান্না করি কেন যে আল্লাহ আমাকে একটা বোন দিল না। . যখন বাসার পাশে,আমার বন্ধু তার বোনের সাথে ঝগড়া করে তখন আনমনে আমার চোখ দিয়ে জ্বল চলে আসে,ইশ আমার যদি একটা বোন থাকত তাহলে হয়ত এইভাবে ঝগড়া করিতাম। . অনেক সময় দেখি আমার বন্ধুটিকে তার বোন পড়তে বসতে বলতেছে,না বসলে তার মাকে ডাকতেছে। অনেক খুনসুটি ভালবাসা তাদের। শুধু এইসব কেন,...

ভালোবাসার গল্প।পর্ব ১

                               গল্প: ভালোবাসা পর্ব:১ বড়লোক বাবার একমাত্র সন্তান হবার কারণে লেখাপড়ার ইতিটা বিদেশেই টেনেছি। বিদেশি কালচার দেখে শেষপর্যন্ত বিরক্ত হয়ে দেশে ফিরে আসলাম। নাড়িরটান বলে কথা! হাজার হোক আমি বাঙালী। বাংলা ভাষা আমার হৃদয়ের প্রতিটা শিরা- উপশিরায় গেঁথে আছে। বিদেশের মাটিতে বসে সবসময় দেশের কথা মনে পড়তো, পরিবারের কথা মনে পড়তো, বন্ধুবান্ধবদের কথা মনে পড়তো। তাইতো বাবার চাপে লেখাপড়া শেষ করেই দেশে ফিরে এসেছি। আমি দেশেই থাকতে চেয়েছিলাম, বড়লোক বাবার ছেলে বলে নিজের ইচ্ছেটাকে কবর দিয়ে বিদেশেই পড়ে থাকতে হয়েছে। মাকে ছোটবেলায় হারিয়েছি। মাকে খুব ভালোবাসতেন বলে দ্বিতীয়বারের মতন কবুল বলার মন মানসিকতা বাবার তৈরি হয়নি। তখন খুব বেশি না বুঝলেও এতটুকু বুঝেছি বাবা মায়ের শেষ স্মৃতিটুকু নিয়ে বেঁচে থাকতে চায়। দাদুভাই, বড় আব্বু, জেঠাইমা কত করে বুঝালো বাবাকে, কিন্তু বাবা রাজি হলেন না। আস্তে আস্তে যখন বড় হতে থাকলাম তখন মাঝে মাঝে বাবাকে একটা অন্ধকার ঘরে ঢুকতে দেখতাম। অবশ্য সেই ঘরে কেউই ঢুকতো ...

সূর্যের হাসি

ছোটগল্প: সূর্যের হাসি মসজিদে মসজিদে ফজরের আযান হচ্ছে। বাংলাদেশে অন্যান্য গ্রামের মানুষজনের মতো শেখপাড়ার মানুষজন আল্লাহর ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে। বাড়িতে বাড়িতে নতুন করে জেগে উঠার পর্ব শুরু হলেও গোলজার মিয়ার বাড়িতে জেগে ওঠার পর্ব সুবহে সাদিকেই হয়েছে। বড় দুঃচিন্তা নিয়ে গোলজার মিয়া ঘরের বাইরে পায়চারি করছেন। ছোট মেয়েটাকে বড় স্বাদ করে বিয়ে দিয়েছেন অল্প বয়সেই। যার পেটে একটু একটু করে বড় হয়ে উঠেছে তার নবাগত শিশু। ফাতেমা নামের মেয়েটির স্বামী ঢাকায় রিকশা চালিয়ে কোনরকম দিন অতিবাহিত করে। গ্রামের রীতিমতো প্রথম সন্তান নাকি বাবার বাড়িতেই হতে হয়। সেজন্য বেশ কিছুদিন থেকে ফাতেমা বাবার বাড়িতেই আছে। আজ শেষরাতের দিকে পেটে কিছুটা যন্ত্রনা করছে। মেয়ের এমন অবস্থায় চোখ থেকে ঘুম উধাও হয়ে গেছে গোলজার মিয়ার। অস্থির অবস্থা নিয়ে ফজরের নামাযে দাঁড়িয়ে আল্লাহর দরবারে কেঁদে সবকিছু ঠিক করে দিতে বলেন। কঠিন মূহুর্তে মেয়েকে হাসপাতালে নেয়ার মতো সামর্থ্য তার নেই। বাস্তব জীবনের কাছে তিনি যে পরাজিত। দারিদ্র্যতার কষাঘাতে দিনদিন সংকীর্ণ স্থান থেকে সংকীর্ণ বাতায়নে পৌঁছে গেছেন তিনি। অপেক্ষার প্...

ভালোবাসার গল্প।পর্ব ৫

                          গল্প: ভালোবাসা পর্ব:৫ (শেষ পর্ব) ফাতেমাকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ খুব সুখেই আছি। শ্রুতিকে বিদায় জানানোর পর দোটানা সম্পর্ককে সমুদ্রের স্রোতে ভাসিয়ে দিয়েছি। মিষ্টি ভালোবাসার মাঝে দুষ্টুমিগুলো সুখ এনে দেয় আমাকে। আমি জানি না ফাতেমা এতে সুখ পায় কিনা! তবে মনে প্রাণে সে আমাকে ভালোবাসে, একথাটা ঢের বুঝতে পারি। প্রায়ই পাঁজাকোলা করে ব্যস্ততাকে ছুটি দিয়ে দু'জন দু'জনের খুব কাছে এসে দু'জন দু'জনার মধ্যে মিশে যাই। হৃদয়ের সবটুকু উজাড় করে দেই একে অপরকে। তবুও মাঝে মাঝে নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হয়। কারণ প্রথম এক বছর কিছুই দিতে পারি নি ফাতেমাকে। কত কষ্টই না করেছে মেয়েটা। স্বামীকে পাবার ব্যাকুলতা সবসময় থাকলেও আমি ছিলাম ছন্নছাড়া। পরকীয়াতে ব্যস্ত থেকে ঠকিয়েছি নিজেকে, ঠকিয়েছি আমার পবিত্র স্ত্রী ফাতেমাকে। মাঝে মাঝে বিষয়টা খুব ভাবায় আমাকে। খুব চিন্তামগ্ন হয়ে যাই। ফাতেমাকে জিজ্ঞেস করেছিলো একদিন, - তুমি কিসের এত টেনশন করো? কিছু হয়েছে? আমার সাথে ভাগাভাগি করে নিতে পারো। - আমার কৃতকর্ম আমাকে ভাবায় ফাতেমা। জানি ...

ভালোবাসার গল্প।পর্ব ৪

                      গল্প: ভালোবাসা পর্ব:৪ সময়ের স্রোত যেন থেমে থাকে না। ফাতেমা শুধু সংসারকে নিয়ে ভালো আছে, আমি ভালো আছি শ্রুতিকে নিয়ে। ইদানীং শ্রুতির বেশ আবদার। টাকা- পয়সার কমতি নেই বিধায় কখনো দিতে গড়িমসি করি না। সবকিছু তো শ্রুতির জন্য। ভীষণ জ্বরে পরে গেলাম। আমার জ্ঞান ছিলো না। শুধু এতটুকু মনে আছে ফাতেমা আমাকে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিয়েছে। এই প্রথম ফাতেমা আমাকে স্পর্শ করেছে। তাও অনিচ্ছাকৃত। বাবা তাড়াতাড়ি ডাক্তার ডাকলেন। ডাক্তারবাবু আসলেন, ব্যবস্থাপত্র দিয়ে চলে গেলেন। সারারাত জ্ঞান ছিলো না আমার। চিন্তায় চিন্তায় হয়তো এমনটা হয়ে গেছি। পরদিন অনেক সুস্থ হয়ে বিছানার উপরে বসে আছি। গত একবছরে একদিন রাতেও বিছানায় ঘুমাইনি। ফাতেমাকে আমার বড়ই আত্মীয় মনে হয় বিধায় তাকে সেখানেই থাকতে দিয়েছি। আমি বিছানায় বসে আছি দেখে বাবা ঘরে ঢুকলেন। ফাতেমা রান্না কাজে রান্নাঘরে ব্যস্ত সময় পার করছে। একবার ওর দু'চোখ দেখে ফোলা ফোলা মনে হলো। বাবা আমার কপালে হাত দিয়ে ভালোভাবে পরীক্ষা করে বললেন, - বাবা এখন কেমন আছিস? - আমি এখন অনেকটাই সুস্থ বাব...

ভালোবাসার গল্প।পর্ব ৩

                     গল্প: ভালোবাসা  পর্ব:৩ শুরু হলো ফাতেমা আর আমার নতুন যুদ্ধ। যুদ্ধ না বলে একে অন্য নামে ডাকার মতন নাম আমার হৃদয়ে আবিষ্কৃত হয়নি। ফাতেমা অনেক ভালো মেয়ে। পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করে, নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়ে, বাবার সেবা করে। আড়ালে থেকে আমারো সেবা করাটা ছাড় দেয় না। গোসলের সময় তোয়ালে, প্যান্ট, শার্ট রেডি করে দেয়া কিংবা মানিব্যাগের টাকা পয়সা নিছি কিনা সব দেখে দিবে। আমি চুপ করে শুধু দেখে যেতাম। শ্রুতির আগে ফাতেমাকে দেখলে হয়তো ওকে ভালোবাসায় আঁকড়ে রাখতাম। বাবা ফাতেমাকে পেয়ে আনন্দে গদগদ। নিজের মেয়ে পায়নি, তাই হয়তো ফাতেমাকে দিয়ে সবটা পূরণ করছে। ফাতেমাও বাবার পছন্দ করা সবকিছু সবসময় করার চেষ্টা করে। ফাতেমা সংসারে আসার পর থেকে বাড়ির দারুন পরিবর্তন ঘটেছে। চাকর-বাকর থেকে শুরু করে বাবা পর্যন্ত সবাই নামাযী হয়েছে। শুধুমাত্র দু'জন একে অপরের সাথে কথা বলিনা বলে হয়তো আমাকে বলতে পারে নি। বাড়িতে হয়তো বাবাকে আর শূন্যতা গ্রাস করতে পারে না। বাবাকে আনন্দে দেখে বেশ ভালো লাগে আমার। অফিসের সব কাজ আমার হাতে বুঝিয়ে দিয়ে ...