অযোগ্য বালিকা

                      (সত্যে ঘটনা অবলম্বনে)
.
-আমি যখন খুব ছোট ছিলাম।বয়স
যখন
আমার পাঁচ বছর
তখন আমাকে আমার আব্বু
প্রাইমারি
ইস্কুলে ভর্তি
করিয়ে দেয়। তখন থেকে আমার
একটা বন্ধু
হয়
তার নাম কবিতা।সে আর আমি
ছিলাম
বেষ্ট ফ্রেন্ড।
ইস্কুলের আমরা দুই জন সব সময়
এক সাথে
থাকতাম।এভাবে চলতে থাকে চার
বছর।
৩য়
শ্রেনী থেকে যখন বার্ষিক
পরীক্ষা
দিয়ে ৪র্থ
শ্রেনীতে ভর্তি হবো তখন
কবিতার বড়
ভাই
ওকে অন্য ইস্কুলে ভর্তি
করিয়ে দেয়।তার
পর
থেকে তার সাথে আর কোন
যোগাযোগ হয়
না
আমার। এর জন্য মনটা সব সময় ওর
জন্য
কাঁদতো।
তাকে দেখার জন্য মনটা কেমন
জানি
করতো। তাই
একদিন মাকে বলে আমার ছোট
ভাইকে
নিয়ে
ওদের বাড়িতে যাই। (আমার ছোট
ভাইয়ে
বয়স ছয়
বছর।আমরা দুই ভাই বোন।)
ওদের বাড়ি আমাদের পাশের
গ্রামেই দুই
কিলোর
রাস্তা তাই আমরা হাঁটতে
হাঁটতে যাচ্ছি
ওদের বাড়ি।
বাড়িতে গিয়ে কবিতাকে পেলাম

বাড়িতে আছে।
এসে আমার সাথে দেখা করলো
কিন্তু
তেমন কিছু
বললো না চলে গেলো। ওকে দেখে
মনে
হলো ও আর আগের মতো নাই অনেক
টাই
বদলে গেছে। ওর মা আমাদের
জন্য কিছু
নাস্তা
নিয়ে আসলো খাওয়ার শেষ না
হতেই
কবিতার মা বলে ,
-- খাওয়া শেষ হলে তোমরা চলে
যাও কবিতার অনেক পড়া আছে এখন
প্রাইভেট
পড়বে।আরো অনেক ধরনের কথা
বলেছে। এই
কথা গুলো শুনে অনেক কষ্ট পাই
তখন।
অতিথি
দের সাথে এমন ব্যবহার। আর
কিছু বলিনি
সোজা
চলে আসলাম বাড়িতে আর ছোট
ভাইকে
বললাম তুই
বাড়িতে এসব কিছু বলিস না ,
বলবি আমরা
অনেক কিছু
খেয়েছি। তার পরে আমি অনেক
কেঁদেছি
এর
পর থেকে কবিতার সাথে আর কোন
যোগাযোগ রাখি নি। .
-দুই বছর পর কবিতার সাথে
আবার দেখা।
আমাদের
ইউনিয়নে একটা মাত্র
হাইস্কুল। তাই
সবাই এখানেই ভর্তি
হয়ে এস.স.সি পর্যন্ত পড়ে।
আমিও ভর্তি
হয়ে
ভর্তি পরীক্ষায় চার নাম্বার
হইলাম।তার
পর থেকে
কবিতার সাথে আমি মিশতে
চাইতাম।
কিন্তু কবিতা আমার
সাথে কেমন জানি আচরন করতো
আমি
বুঝতাম না।
অনেক দিন পর আমার আরেকটা
বান্ধবী হয়
।কিন্তু
সে আমায় দেখে নাই তার বড় বোন
বলছে তাই।আমি অনেক ভালো
ছাত্রী
ক্লাসের
মধ্যে সব থেকে বেশি পড়া বলি
আর অনেক
মনোযোগি।আর সে খারাপ
ছাত্রী একটু
মনোযোগী না তাই ওর বড় বোন
আমার
সাথে
বান্ধুত্ব করতে বলেছে।।
কবিতা আমার
সাথে মিশে না
আর একা একা থাকতে ভালো লাগে
না।
একদিন তো
কবিতা আমাকে Sorry বলে দেয়।
তাকে
আর
বেষ্ট ফ্রেন্ড ভাবি না।
আমার এখন অনেক
বেষ্ট
ফ্রেন্ড আছে।শুধু তাই না সে
সব সময়
আমায়
থেকে দুরে থাকতো কারন আমরা
গরিব
ছিলাম।আর
সে যে সব ফ্রেন্ড বানাইছে
সেই সব বড়
ধরনের মানুষের মেয়ে সাথে
দের
ফ্রেন্ডশিপ
করছে।আর ওদের কাছে যেতে
নিজেই
লজ্জা
বোধ করতাম তাই কাছে যাইতাম
না দুরে
থাকতাম।
-পরে যে মেয়েটা আমার সাথে
ফ্রেন্ডশিপ
করে তার নাম ফারজানা। অন্য
ইস্কুল
থেকে এসে
আমাদের গ্রামের ইস্কুলে
ভর্তি হয়।ও
অনেক
ভদ্র নম্র স্বভাবের মেয়ে
কারো সাথে খুব
একটা
মিশতো না ওর বড় বোন বলাতে
আমার
সাথে কথা
বলে তার থেকে আস্তে আস্তে
ফ্রেন্ডশিপ
গড়ে ওঠে।ওরা অনেক বড়লোক
কোটিপতি।
সত্যিই
আমার সাথে ফ্রেন্ডশিপ করে
আমার
মেধার
জন্য। কারন আমি অনেক গরিব আর
দেখতে
তেমন একটা সুন্দর না আর ও
দেখতে অনেক
সুন্দর সব সময় স্মার্ট হয়ে
থাকে। আর আমি
ক্ষ্যাত। তার পরেও ও আমাকে
ফ্রেন্ড
হিসেবে নিছে আমি বিশ্বাস
করতে
পারছি না।
.
. আমরা সব সময় এক সাথে
থাকতাম।
তাই দেখে কবিতার খুব হিংসে
হতো!!!
আমি আর
ফারজানা একে ওপর কে ছাড়া
কিছু
বুঝতাম না।যা কিছু
করতাম দুইজনে শেয়ার করে
করতাম আর
পরীক্ষার
সময় আমি ওকে হেল্প করতাম আর ও
আমাকে
হেল্প করতো। আমরা দুই জন
একটা বই দুই
ভাগ
করতাম ও এক ভাগ পড়ে আসতো আর
আমি
এক ভাগ
পড়ে আসতাম এভাবে শেয়ার করে
পরীক্ষা দিতাম। ফারজানাকে
ছাড়া আর কাউকে দেখাতাম না।
শুধু তাই না ঈদের সময় আমি
ওদের
বাড়িতে যাইতাম
সেও আসতো আমাদের টিনের ঘরে।
সত্যি
কথা
বলতে কি আমার না খুব লজ্জা
করতো
কারন আমরা
তো অনেক গরিব ছিলাম, আমাদের
বাড়ি
আসতে
গেলে অনেক কাদা পানির উপর
দিয়ে
হেটে
আসতে হয় আর বাড়িটা টিনের।
কোনমতো
ছোট
একটা বাড়ি একজন মানুষ আসলে
যে বসতে
দিবো
সেই রকম কোন যায়গা নাই।
ফারজানা
তার পরেও আসতো
এই গরিবের বাড়ি অনেক ভালো
লাগতো।
আমার
বন্ধুত্বের ঘাটতি পুরন
হয়েছে ফারজানা
কে
পেয়ে কারন সে আমাকে বেষ্ট
ফ্রেন্ড
ভাবে।
.
- আমি যখন যখন নবম শ্রেনীতে
ভর্তি
হবো
তখন ফারজানারা শহরে চলে যায়
আর
ফারজানাকে শহরের
ইস্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়া
হয়।হঠাৎ
মনটা আবার
ভেঁঙ্গে গেলো তিন বছরের
ফ্রেন্ডশিপ
আবার
হারিয়ে ফেললাম আবার একা হয়ে
গেলাম।তার পর
থেকে আর কোন ফ্রেন্ড বানাই
নি। সে
মাঝে
মাঝে ফোন দিতো কথা হতো। হঠাৎ
একদিন
ফোন দেওয়াও বন্ধ করে দিলো
ফারজানা।
আর কোন
যোগাযোগ রাখে নি।
.
প্রায় এক বছরের মতো হবে
একদিন ফোন
দিয়ে ফারজানা বলে
আমার বড় আপু ফোন দিতে নিষেধ
করেছেন, তাই
তোকে ফোন দেই না। অনেক কষ্ট
পাই এই
কথা
শুনে।
.
-এস.স. সি পাস করে আমিও শহরের
কলেজে ভর্তি হই।
কাকতালীয়ভাবে সেই
ফারজানা
ও এই কলেজে ভর্তি হয়েছে। আমি
তাকে
দেখে অভিমান করে কথা বলি
নাই। সেও
দেখি
বদলে গেছে আমার সাথে কথা বলে
নি।
শহরের
বন্ধুদের সাথে সে আড্ডা
দিতো। আমি
এখানে
কিছুই চিনতাম না তাই
ফারজানার সাথে
মিশতে চাইতাম কিন্তু
সে আমার সাথে মিশতো না। সে
চলতো
অনেক
বড় লোকের মেয়েদের সাথে
তাদের
সামনে
গিয়ে কখনো দাড়াতে পারতাম না
লজ্জায় তাই আর
কখনো ফারজানার সাথে যোগাযোগ
করা
হয়নি
কলেজে ও ওর বন্ধুদের সাথে
থাকে আর
আমি
আমার মতো থাকি।
কারন আমি গরীবের মেয়ে।
ফারজানা,
কবিতার সাথে মেশার যোগ্য না,
অযোগ্য।
.--------সমাপ্ত-------

Comments

  1. Casino Slot Machines & Machines - Play for Fun at Casino Pachinko
    Casino Slot 슬롯 커뮤니티 Machines & 브라 벗기 Machines. w88 mobile Play 밑슴 for Fun at Casino Pachinko! All the big winners! 뉴 포커 디펜스

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

বোনের ভালোবাসা

ভালোবাসার গল্প।পর্ব ১

ভালোবাসার গল্প।পর্ব ২